১০:০০ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫

বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশ যাওয়া নির্ভর করছে তার শারীরিক অবস্থার ওপর : ডা. জাহিদ

রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপির চেয়ারপারর্সন বেগম খালেদা জিয়া সুস্থ আছেন জানিয়ে তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেছেন, ‘বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসা নিতে যাওয়ার বিষয়টি নির্ভর করছে একান্তই তার শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্তের ওপর।’

তিনি বলেছেন, “দলীয় চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসাকেন্দ্রিক নিরাপত্তার বিষয়টিই এখন প্রাধান্য পাচ্ছে। চিকিৎসার দায়িত্বে থাকা দেশি- বিদেশি চিকিৎসকেরাও খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার ওপর সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন। তাই যখনই মেডিকেল বোর্ড মনে করবে তিনি ‘সেইফলি ফ্লাই’ করতে পারবেন তখনই তাকে বিদেশে নেয়া হবে।”

আজ শনিবার বিকেল পৌনে ৪টার এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ কথা বলেন জাহিদ হোসেন।

ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, “ম্যাডামের বিদেশে যাওয়ার ব্যাপারে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি রয়েছে। যখনই মেডিকেল বোর্ড তার বিদেশ যাওয়ার ব্যপারে যথাযথ তৈরি মনে করবেন, তাকে ‘সেইফলি ট্রান্সফার’ করা যাবে তখনই বিদেশে নিয়ে যাওয়া হবে। কারণ মনে রাখতে হবে, ১২ থেকে ১৪ ঘন্টা যখন এয়ার ফ্লাই করা হবে, তখন হাই উচ্চতায় মানুষের শারীরিক যে পরিবর্তন হয় সেটির সঙ্গে খাপ খাওয়ানো একজন অসুস্থ মানুষের পক্ষে সব সময় সম্ভব হয় না। কাজেই এটা খেয়াল রেখে কেউ বিভ্রান্ত হবেন না, বিভ্রান্তি ছড়াবেন না।”

বিএনপির চেয়ারপার্সনের এই ব্যক্তিগত চিকিৎসক বলেন, ‘মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শ ক্রমে দলীয় চেয়ারপার্সন বেগম খলেদা জিয়াকে বিদেশে নেয়ার প্রক্রিয় অব্যাহত রেখেছিলাম, কিন্তু কাতারের আমির যে এয়ার এ্যাম্বুলেন্স পাঠানোর কথা বলেছিলো কারিগরি ত্রুটির কারনে সেটা আসতে পারনি।’

‘অন্যদিকে মেডিকেল বোর্ডের সদস্যগণ জরুরিভাবে সভা করে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো ওই মুহূর্তে তার ফ্লাই করা সঠিক হবে না; সেজন্যই ম্যাডামের বিদেশ যাওয়ার বিষয়টি কিছুটা বিলম্বিত হচ্ছে এবং ভবিষ্যতে তার শারীরিক পরিস্থিতি বলে দেবে কখন বিদেশে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হবে।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের মেডিকেল এ্যাম্বুলেন্স সব সময়ই প্রস্তুত রয়েছে কিন্তু তারপরেও দেশনেত্রীর সুচিকিৎসা এবং চিকিৎসাগত দিক থেকে সেফটি এবং সিকিউরিটি সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য পাচ্ছে।’

বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসার বিষয়ে কর্তব্যরত ডাক্তারদের আন্তরিকতা তুলে ধরে জাহিদ বলেন, ‘আমাদের মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরাসহ ইউকে, আমেরিকা ও চীন থেকে যে সকল ডাক্তাররা এসেছেন সবাই ম্যাডামের ফিজিক্যাল কন্ডিশনের দিকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন। আমরা মনে করি দেশের সকল মানুষই তার সুস্থতা চায়। কাজেই তার স্বাস্থ্য আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার।’

তিনি বলেন, ‘দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান যেমন তাৎক্ষণিকভাবে ম্যাডামের চিকিৎসার বিষয়ে তদারকি করছেন, তেমনি তিনি এবং দল চিকিৎসকদের মতামতকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন। কারণ, মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা গত ৬ বছর ধরে প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও তাকে যে সেবা দিয়ে এসেছেন তা স্মরণীয়। এখনও তারা দক্ষতার সঙ্গে পরিস্থিতি হেন্ডেল করছেন। ডা. জুবাইদা রহমান সকাল বিকাল মেডিকেল বোর্ডের সঙ্গে সমন্বয় করছেন।’

কোনো ধরনের গুজব না ছড়াতে সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বিএনপির চেয়ারপার্সনের এই ব্যক্তিগত চিকিৎসক বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসার ব্যাপারে সোস্যাল মিডিয়াতে নামা গুজব ছড়াচ্ছে। আমি সকলকে অনুরোধ করবো দয়া করে দেশনেত্রীর প্রতি যদি আপনাদের শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা থাকে যা সত্যি তার বাইরে গুজব ছড়িয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করবেন না এবং শুধু আল্লাহর কাছে দোয়া করুন, তার অশেষ রহমতে এর চেয়েও প্রতিকূল অবস্থায়ও তিনি সুস্থ হয়ে উঠেছিলেন। মেডিকেল বোর্ড এবারও অত্যন্ত আশাবাদী তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠবেন।’

বেগম খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসায় অন্তর্বর্তী সরকার সকল ধরনের সহায়তা করছে জানিয়ে ডা. জাহিদ বলেন, দলীয় চেয়ারপার্সনের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে কাতার এবং বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার আমাদের সর্বোচ্চ সহযোগিতা করছেন। ম্যাডামকে বিদেশে নেয়ার ব্যাপারে তাদের সহযোগিতা অব্যাহত রেখেছেন। সবার আগে তার চিকিৎসার বিষয়টি প্রাধান্য পাচ্ছে। এখানকার হাসপাতালের নার্স, স্টাফ থেকে শুরু করে সবাই সহযোগিতা করছে। আমরা দেশবাসী সকলের সহযোগিতা চাই।

১৪ দিন ধরে বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। গত ২৩ নভেম্বর রাতে শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে খালেদা জিয়াকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ডের অধীনে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা কার্যক্রম চলছে।

Tag :
About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

আত্মবিশ্বাসের ঘাটতি রয়েছে সৌম্যর সরকারের মধ্যে

বিশ্বজুড়ে কর্পোরেট মিডিয়ার সংবাদ নিয়ে বিশ্বাস  যোগ্যতার সঙ্কট ক্রমশ বাড়ছে : মাহবুব মোর্শেদ 

বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশ যাওয়া নির্ভর করছে তার শারীরিক অবস্থার ওপর : ডা. জাহিদ

আপডেট টাইম : ০৬:৫৮:০১ অপরাহ্ন, শনিবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২৫

রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপির চেয়ারপারর্সন বেগম খালেদা জিয়া সুস্থ আছেন জানিয়ে তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেছেন, ‘বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসা নিতে যাওয়ার বিষয়টি নির্ভর করছে একান্তই তার শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্তের ওপর।’

তিনি বলেছেন, “দলীয় চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসাকেন্দ্রিক নিরাপত্তার বিষয়টিই এখন প্রাধান্য পাচ্ছে। চিকিৎসার দায়িত্বে থাকা দেশি- বিদেশি চিকিৎসকেরাও খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার ওপর সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন। তাই যখনই মেডিকেল বোর্ড মনে করবে তিনি ‘সেইফলি ফ্লাই’ করতে পারবেন তখনই তাকে বিদেশে নেয়া হবে।”

আজ শনিবার বিকেল পৌনে ৪টার এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ কথা বলেন জাহিদ হোসেন।

ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, “ম্যাডামের বিদেশে যাওয়ার ব্যাপারে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি রয়েছে। যখনই মেডিকেল বোর্ড তার বিদেশ যাওয়ার ব্যপারে যথাযথ তৈরি মনে করবেন, তাকে ‘সেইফলি ট্রান্সফার’ করা যাবে তখনই বিদেশে নিয়ে যাওয়া হবে। কারণ মনে রাখতে হবে, ১২ থেকে ১৪ ঘন্টা যখন এয়ার ফ্লাই করা হবে, তখন হাই উচ্চতায় মানুষের শারীরিক যে পরিবর্তন হয় সেটির সঙ্গে খাপ খাওয়ানো একজন অসুস্থ মানুষের পক্ষে সব সময় সম্ভব হয় না। কাজেই এটা খেয়াল রেখে কেউ বিভ্রান্ত হবেন না, বিভ্রান্তি ছড়াবেন না।”

বিএনপির চেয়ারপার্সনের এই ব্যক্তিগত চিকিৎসক বলেন, ‘মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শ ক্রমে দলীয় চেয়ারপার্সন বেগম খলেদা জিয়াকে বিদেশে নেয়ার প্রক্রিয় অব্যাহত রেখেছিলাম, কিন্তু কাতারের আমির যে এয়ার এ্যাম্বুলেন্স পাঠানোর কথা বলেছিলো কারিগরি ত্রুটির কারনে সেটা আসতে পারনি।’

‘অন্যদিকে মেডিকেল বোর্ডের সদস্যগণ জরুরিভাবে সভা করে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো ওই মুহূর্তে তার ফ্লাই করা সঠিক হবে না; সেজন্যই ম্যাডামের বিদেশ যাওয়ার বিষয়টি কিছুটা বিলম্বিত হচ্ছে এবং ভবিষ্যতে তার শারীরিক পরিস্থিতি বলে দেবে কখন বিদেশে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হবে।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের মেডিকেল এ্যাম্বুলেন্স সব সময়ই প্রস্তুত রয়েছে কিন্তু তারপরেও দেশনেত্রীর সুচিকিৎসা এবং চিকিৎসাগত দিক থেকে সেফটি এবং সিকিউরিটি সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য পাচ্ছে।’

বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসার বিষয়ে কর্তব্যরত ডাক্তারদের আন্তরিকতা তুলে ধরে জাহিদ বলেন, ‘আমাদের মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরাসহ ইউকে, আমেরিকা ও চীন থেকে যে সকল ডাক্তাররা এসেছেন সবাই ম্যাডামের ফিজিক্যাল কন্ডিশনের দিকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন। আমরা মনে করি দেশের সকল মানুষই তার সুস্থতা চায়। কাজেই তার স্বাস্থ্য আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার।’

তিনি বলেন, ‘দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান যেমন তাৎক্ষণিকভাবে ম্যাডামের চিকিৎসার বিষয়ে তদারকি করছেন, তেমনি তিনি এবং দল চিকিৎসকদের মতামতকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন। কারণ, মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা গত ৬ বছর ধরে প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও তাকে যে সেবা দিয়ে এসেছেন তা স্মরণীয়। এখনও তারা দক্ষতার সঙ্গে পরিস্থিতি হেন্ডেল করছেন। ডা. জুবাইদা রহমান সকাল বিকাল মেডিকেল বোর্ডের সঙ্গে সমন্বয় করছেন।’

কোনো ধরনের গুজব না ছড়াতে সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বিএনপির চেয়ারপার্সনের এই ব্যক্তিগত চিকিৎসক বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসার ব্যাপারে সোস্যাল মিডিয়াতে নামা গুজব ছড়াচ্ছে। আমি সকলকে অনুরোধ করবো দয়া করে দেশনেত্রীর প্রতি যদি আপনাদের শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা থাকে যা সত্যি তার বাইরে গুজব ছড়িয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করবেন না এবং শুধু আল্লাহর কাছে দোয়া করুন, তার অশেষ রহমতে এর চেয়েও প্রতিকূল অবস্থায়ও তিনি সুস্থ হয়ে উঠেছিলেন। মেডিকেল বোর্ড এবারও অত্যন্ত আশাবাদী তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠবেন।’

বেগম খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসায় অন্তর্বর্তী সরকার সকল ধরনের সহায়তা করছে জানিয়ে ডা. জাহিদ বলেন, দলীয় চেয়ারপার্সনের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে কাতার এবং বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার আমাদের সর্বোচ্চ সহযোগিতা করছেন। ম্যাডামকে বিদেশে নেয়ার ব্যাপারে তাদের সহযোগিতা অব্যাহত রেখেছেন। সবার আগে তার চিকিৎসার বিষয়টি প্রাধান্য পাচ্ছে। এখানকার হাসপাতালের নার্স, স্টাফ থেকে শুরু করে সবাই সহযোগিতা করছে। আমরা দেশবাসী সকলের সহযোগিতা চাই।

১৪ দিন ধরে বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। গত ২৩ নভেম্বর রাতে শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে খালেদা জিয়াকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ডের অধীনে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা কার্যক্রম চলছে।