১১:৫২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫
ভিত্তিপ্রস্তর জুলাইয়ে

চমেক হাসপাতালের বিশেষায়িত বার্ন ইউনিটের নকশা চূড়ান্ত

চট্টগ্রামে নির্মিতব্য দেড়শ শয্যার বিশেষায়িত বার্ন এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের নকশা চূড়ান্ত হয়েছে। চীন সরকারের অর্থায়নে নির্মাণ হতে যাওয়া বিশেষায়িত এ ইউনিটের পূর্বের নকশায় কিছুটা পরিবর্তনের পর চূড়ান্ত করেছে দু’দেশ। বার্ন ইউনিট প্রকল্পটি আগামী ৫ অথবা ৬ জুলাই ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হবে।
গতকাল বুধবার রাজধানী ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের সম্মেলন কক্ষে চীন সরকারের সাথে এ সংক্রান্ত চুক্তি স্বাক্ষর সম্পন্ন করা হয়। এতে বাংলাদেশের হয়ে চুক্তি স্বাক্ষর করেন চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. তসলিম উদ্দীন।
এর আগে গত শুক্রবার বাংলাদেশে আসে চীন সরকারের তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল। তারা চমেক হাসপাতালে নির্মিতব্য দেড়শ শয্যার বিশেষায়িত বার্ন এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের নকশাসহ পূর্ণাঙ্গ কার্যক্রম চূড়ান্ত করতে বাংলাদেশে আসে। এতদিন চীন প্রতিনিধির সঙ্গে স্বাস্থ্যমন্ত্রীসহ সরকারের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদের বার্ন ইউনিট নিয়ে দফায় দফায় বৈঠক হয়। সবকিছু চূড়ান্ত হওয়ার পর গতকাল চূড়ান্ত চুক্তি স্বাক্ষর সম্পন্ন করা হয়।
জানা গেছে, বাংলাদেশ ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড এবং স্থাপত্য অধিদপ্তরের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী চীন সরকার কর্তৃক প্রস্তাবিত ভবনের নকশায় কিছু পরিবর্তনপূর্বক চ‚ড়ান্ত অনুমোদন চুক্তি করা হয়। এর মধ্যে চলাচলের এবং জরুরি মুহূর্তের জন্য সিঁড়ির সংখ্যা বৃদ্ধি তথা ফায়ার এক্সিট, ছাদের উচ্চতা বৃদ্ধি, র্যাম্পের সাইজ বৃদ্ধি, জরুরি অস্ত্রোপচার কক্ষের পাশে যন্ত্রপাতির কক্ষ বানানো, খাবার ও হাসপাতাল বর্জ্য পরিবহনের জন্য দুটি ভ্যান, অক্সিজেন প্ল্যান্ট সংযোজন, সোলার পাওয়ার সিস্টেম, আইসিসইউ সরঞ্জাম বৃদ্ধি এবং হাসপাতালের অন্যান্য সরঞ্জামসহ যাবতীয় বিষয় বৃদ্ধি ও নকশায় পরির্বতন আনা হয়েছে। যা চ‚ড়ান্ত করা হয় দু’দেশের মতামতের ভিত্তিতে।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের প্রাক্তন পরিচালক ও নেভীর মেডিকেল সার্ভিসের পরিচালক সার্জন কমোডর মো. শামীম আহসান, চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. তসলিম উদ্দীন, শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ডা. রায়হানা আউয়াল, চমেক হাসপাতালের বার্ন এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের প্রধান ডা. রফিক উদ্দিন আহমদে ছাড়াও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, গণপূর্ত বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগের প্রতিনিধিরা।
উল্লেখ্য, চমেক হাসপাতালের আওতাধীন গোঁয়াছি বাগানে নির্মিতব্য বার্ন ইউনিট প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছে ২৮৪ কোটি ৭৬ লাখ ৫২ হাজার টাকা। এর মধ্যে ভবন নির্মাণ, যন্ত্রপাতি ও আসবাবপত্র বাবদ মোট ১৭৯ কোটি ৮৩ লাখ ২০ হাজার চীন সরকার বহন করবে। বাংলাদেশ সরকার ৭০ কোটি টাকা কাস্টমস ডিউটিসহ আনুষঙ্গিক রাস্তা, সীমানা প্রাচীর, বৈদ্যুতিক সংযোগ, নিরাপত্তা ইত্যাদি বাবদ মোট ১০৪ কোটি ৯৩ লাখ ৩২ হাজার বহন করবে।
চমেকের প্রধান ছাত্রাবাস সংলগ্ন হাসপাতালের আওতাধীন গোঁয়াছি বাগান এলাকাতেই এ হাসপাতাল নির্মাণ করা হবে। জায়গায়টিতে ইতোমধ্যে হাসপাতাল নির্মাণ কার্যক্রম শুরু করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ৬ তলা ভবনের নির্মিতব্য বিশেষায়িত এ বার্ন ইউনিটে ৩ হাজার ৬৩০ বর্গমিটার জায়গায় ৯ হাজার বর্গমিটার স্পেস থাকবে জরুরি বিভাগ ও বহির্বিভাগসহ ১০ শয্যার আইসিইউ, ২৫ শয্যার এইচডিইউ, ৩টি অত্যাধুনিক অপারেশন থিয়েটারসহ ১৫০ শয্যার ইউনিট।

Tag :
About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

আত্মবিশ্বাসের ঘাটতি রয়েছে সৌম্যর সরকারের মধ্যে

বিজ্ঞাপনের নামে ৬ লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগে অনলাইন টিভির বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীদের মানববন্ধন

ভিত্তিপ্রস্তর জুলাইয়ে

চমেক হাসপাতালের বিশেষায়িত বার্ন ইউনিটের নকশা চূড়ান্ত

আপডেট টাইম : ১২:০৭:০০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ জুন ২০২৪

চট্টগ্রামে নির্মিতব্য দেড়শ শয্যার বিশেষায়িত বার্ন এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের নকশা চূড়ান্ত হয়েছে। চীন সরকারের অর্থায়নে নির্মাণ হতে যাওয়া বিশেষায়িত এ ইউনিটের পূর্বের নকশায় কিছুটা পরিবর্তনের পর চূড়ান্ত করেছে দু’দেশ। বার্ন ইউনিট প্রকল্পটি আগামী ৫ অথবা ৬ জুলাই ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হবে।
গতকাল বুধবার রাজধানী ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের সম্মেলন কক্ষে চীন সরকারের সাথে এ সংক্রান্ত চুক্তি স্বাক্ষর সম্পন্ন করা হয়। এতে বাংলাদেশের হয়ে চুক্তি স্বাক্ষর করেন চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. তসলিম উদ্দীন।
এর আগে গত শুক্রবার বাংলাদেশে আসে চীন সরকারের তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল। তারা চমেক হাসপাতালে নির্মিতব্য দেড়শ শয্যার বিশেষায়িত বার্ন এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের নকশাসহ পূর্ণাঙ্গ কার্যক্রম চূড়ান্ত করতে বাংলাদেশে আসে। এতদিন চীন প্রতিনিধির সঙ্গে স্বাস্থ্যমন্ত্রীসহ সরকারের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদের বার্ন ইউনিট নিয়ে দফায় দফায় বৈঠক হয়। সবকিছু চূড়ান্ত হওয়ার পর গতকাল চূড়ান্ত চুক্তি স্বাক্ষর সম্পন্ন করা হয়।
জানা গেছে, বাংলাদেশ ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড এবং স্থাপত্য অধিদপ্তরের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী চীন সরকার কর্তৃক প্রস্তাবিত ভবনের নকশায় কিছু পরিবর্তনপূর্বক চ‚ড়ান্ত অনুমোদন চুক্তি করা হয়। এর মধ্যে চলাচলের এবং জরুরি মুহূর্তের জন্য সিঁড়ির সংখ্যা বৃদ্ধি তথা ফায়ার এক্সিট, ছাদের উচ্চতা বৃদ্ধি, র্যাম্পের সাইজ বৃদ্ধি, জরুরি অস্ত্রোপচার কক্ষের পাশে যন্ত্রপাতির কক্ষ বানানো, খাবার ও হাসপাতাল বর্জ্য পরিবহনের জন্য দুটি ভ্যান, অক্সিজেন প্ল্যান্ট সংযোজন, সোলার পাওয়ার সিস্টেম, আইসিসইউ সরঞ্জাম বৃদ্ধি এবং হাসপাতালের অন্যান্য সরঞ্জামসহ যাবতীয় বিষয় বৃদ্ধি ও নকশায় পরির্বতন আনা হয়েছে। যা চ‚ড়ান্ত করা হয় দু’দেশের মতামতের ভিত্তিতে।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের প্রাক্তন পরিচালক ও নেভীর মেডিকেল সার্ভিসের পরিচালক সার্জন কমোডর মো. শামীম আহসান, চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. তসলিম উদ্দীন, শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ডা. রায়হানা আউয়াল, চমেক হাসপাতালের বার্ন এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের প্রধান ডা. রফিক উদ্দিন আহমদে ছাড়াও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, গণপূর্ত বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগের প্রতিনিধিরা।
উল্লেখ্য, চমেক হাসপাতালের আওতাধীন গোঁয়াছি বাগানে নির্মিতব্য বার্ন ইউনিট প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছে ২৮৪ কোটি ৭৬ লাখ ৫২ হাজার টাকা। এর মধ্যে ভবন নির্মাণ, যন্ত্রপাতি ও আসবাবপত্র বাবদ মোট ১৭৯ কোটি ৮৩ লাখ ২০ হাজার চীন সরকার বহন করবে। বাংলাদেশ সরকার ৭০ কোটি টাকা কাস্টমস ডিউটিসহ আনুষঙ্গিক রাস্তা, সীমানা প্রাচীর, বৈদ্যুতিক সংযোগ, নিরাপত্তা ইত্যাদি বাবদ মোট ১০৪ কোটি ৯৩ লাখ ৩২ হাজার বহন করবে।
চমেকের প্রধান ছাত্রাবাস সংলগ্ন হাসপাতালের আওতাধীন গোঁয়াছি বাগান এলাকাতেই এ হাসপাতাল নির্মাণ করা হবে। জায়গায়টিতে ইতোমধ্যে হাসপাতাল নির্মাণ কার্যক্রম শুরু করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ৬ তলা ভবনের নির্মিতব্য বিশেষায়িত এ বার্ন ইউনিটে ৩ হাজার ৬৩০ বর্গমিটার জায়গায় ৯ হাজার বর্গমিটার স্পেস থাকবে জরুরি বিভাগ ও বহির্বিভাগসহ ১০ শয্যার আইসিইউ, ২৫ শয্যার এইচডিইউ, ৩টি অত্যাধুনিক অপারেশন থিয়েটারসহ ১৫০ শয্যার ইউনিট।