০৬:৫৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪

টুইটার কিনলেন ইলন মাস্ক

  • নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট টাইম : ১১:৩০:০৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৭ এপ্রিল ২০২২
  • ৪৬৪ বার পঠিত

টুইটার কিনলেন ইলন মাস্ক

বিশ্বজুড়ে প্রযুক্তি উদ্যোক্তা হিসেবে বেশ পরিচিত নাম ইলন মাস্ক। সমগ্র বিশ্বের শীর্ষ ধনী ব্যক্তিও তিনি। এছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও তিনি তুমুল জনপ্রিয় একজন ব্যক্তি, বিশেষ করে টুইটারে। ইলন মাস্ক এর টুইটারে ৮ কোটি ৪২ লাখের বেশি অনুসারী তাঁর। তবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তাঁর কোনো অ্যাকাউন্ট নেই। ফেসবুকের বিরুদ্ধে তিনি রীতিমতো নাখোশ।

বিশেষ করে ব্যক্তিগত গোপনীয়তার বিষয় গুলো নিয়ে তিনি কাজ করতে চান। এছাড়া ব্যক্তিগত গোপনীয়তার বিষয় গুলো শক্তিশালী করা, টুইটারকে আরও বেশি সহজ, উন্মুক্ত ও টেকনিক্যালি আরও স্বচ্ছ করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে টুইটারকে কিনে নিলেন ইলন মাস্ক।

প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ইলন মাস্ক বরাবরই ঠোঁট- কাটা বা স্পষ্টভাষী হিসেবে পরিচিত। সময় পেলে ফেসবুকের বিরুদ্ধে দু- একটি কথা শোনাতে ভোলেন না তিনি। বর্তমান প্রযুক্তি বিশ্বে দীর্ঘ দিন ধরেই গুঞ্জন ছিল, ফেসবুককে টক্কর দিতে ইলন মাস্ক হয়তো নতুন কোনো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম আনবেন পৃথিবী বাসীর জন্য। তবে টুইটারে তাঁর পোস্ট থেকে অনেকেই আবার ভিন্ন ধারণাও পোষণ করতে থাকেন। ইলন বরাবরই নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ নিতে আগ্রহী, গতকাল সোমবার সেই টুইটারে লাভ চিহ্ন দিয়ে “ইয়েস” কথাটি লিখলেন, তখন আর কারও বুঝতে বাকি নেই, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টুইটারের মালিক এখন কে।

এক সংবাদের বিবিসি জানিয়েছে, ৪ হাজার ৪০০ কোটি মার্কিন ডলারে মার্কিন ধনকুবের ইলন মাস্কের কাছে টুইটার বিক্রি করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এর পরিচালনা পরিষদ। তবে বেশ কিছুদিন কথা চালা-চালির পর গতকাল সোমবার এক বৈঠক থেকে সর্বশেষ এ সিদ্ধান্ত এসেছে।


সাধারন মানুষ এখন প্রশ্ন করছে, ইলন মাস্ক কোন উদ্দেশ্যে টুইটার কিনলেন, আর টুইটার নিয়ে তিনি কোন পথে হাঁটবেন? এ-ব্যাপারে অবশ্য তিনি আগে ভাগেই সব পরিষ্কার করে বলে দিয়েছেন।

ইলন মাস্ক আগেই বলেছিলেন, তিনি একেবারে রাজনীতির বাইরে থাকতে চান। তবে ইতিমধ্যে বেশ কয়েক বার মার্কিন সরকারের সমালোচনা করেছেন তিনি। এদিকে দ্বিতীয় শীর্ষ ধনী ও প্রযুক্তি উদ্যোক্তা জেফ বেজোস তাঁকে খোঁচা দিয়ে রেখেছেন। তিনি বলেছেন, চীন সরকার কি এবার টুইটার থেকে বাড়তি সুবিধা পাবে?তবে মাস্ক অবশ্য এর কোনো জবাব দেননি এখনো।

বিবিসির খবরে আরও জানানো হয়েছে, কিছুদিন আগে টুইটারের ৯.২ শতাংশ শেয়ার কিনেছেন বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ ধনী ইলন মাস্ক। সেই তখন থেকেই গুঞ্জন উঠেছিল ছিল, তিনি পুরো টুইটার কিনে নেবেন। এবার তাহলে সেই গুঞ্জন সত্যি হলো।এখন মাস্ক টুইটারের পূর্ণাঙ্গ মালিকানা কিনে নিতে ৪ হাজার ৩০০ কোটি ডলারের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। এই নিয়ে টুইটারের পরিচালনা পর্ষদের সঙ্গে মাস্কের বৈঠক হয়। তবে টুইটারের পর্ষদ এর আগে মাস্কের প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছিল।

ইলন মাস্ক কিছুদিন আগে বলেছেন, তিনি বিশ্বাস করেন, টুইটারের আরও উন্মুক্ত ও টেকনিক্যালি স্বচ্ছ হওয়া উচিত। এটি বাক স্বাধীনতার অন্তর্ভুক্তি মূলক পরিবেশ হওয়া উচিত। তিনি নিজের সাড়ে ৮ কোটি অনুসারীর উদ্দেশে প্রশ্ন রাখেন, টুইটারে এডিট বাটন বা সম্পাদনার সুযোগ রাখা উচিত কি না। উত্তরে ৭৪ শতাংশ মানুষ বলেন, ‘হ্যাঁ, রাখা উচিত।”

এখন ইলন মাস্কের প্রস্তাব বাস্তবায়িত হলে কে টুইটার পরিচালনা করবেন, তা পরিষ্কার নয়। কোম্পানির অফিসিয়াল ওয়েবসাইট অনুসারে তিনি টেসলার প্রধান নির্বাহীর পাশাপাশি ‘টেকনোকিংশিয়াছাড়া একধারে তিনি প্রধান নির্বাহী, প্রধান প্রযুক্তি কর্মকর্তা এবং রকেট ও মহাকাশযান সংস্থা স্পেসএক্সের চেয়ারম্যান। ইলন মাস্ক আরও বেশ কয়েকটি ব্যবসা ও স্টার্টআপের সঙ্গে জড়িত। টুইটারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন ভারতীয় প্রযুক্তিবিদ পরাগ আগরওয়াল। এছাড়া টুইটারের সহপ্রতিষ্ঠাতা জ্যাক ডরসির সমর্থনে গত নভেম্বরে তিনি দায়িত্ব পেয়েছিলেন। ওই সময় ডরসি বলেছিলেন, “টুইটারের প্রধান নির্বাহী হিসেবে পরাগের ওপর আমার আস্থা আরও গভীর। আমি মাস্ক এর দক্ষতা, সহৃদয়তা ও আত্মার প্রতি গভীর ভাবে কৃতজ্ঞ। এখন তাঁর নেতৃত্ব দেওয়ার সময় এসেছে।”

ইলন মাস্ক ইতিমধ্যে টুইটারের ব্যবস্থাপনা নিয়ে সমালোচনা করেছেন। প্রস্তাব-পত্রে তিনি টুইটারের চেয়ারম্যান ব্রেট টেলরকে বলেছেন, “ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষে আমার আস্থা নেই।”

তবে টুইটার ব্যবহারকারীরা আশা করতে পারেন, ইলন মাস্কের অধীন এটি আরও উদার হবে। তাঁর প্রতি শ্রুতি যদি অটল থাকে, তবে টুইটারকে আরও উন্মুক্ত দেখা যাবে এটা সত্যি।

বিবিসি, ইনডিপেনডেন্ট, নিউইয়র্কার, ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল থেকে মো. মিন্টু হোসেন

About Author Information

টুইটার কিনলেন ইলন মাস্ক

আপডেট টাইম : ১১:৩০:০৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৭ এপ্রিল ২০২২

বিশ্বজুড়ে প্রযুক্তি উদ্যোক্তা হিসেবে বেশ পরিচিত নাম ইলন মাস্ক। সমগ্র বিশ্বের শীর্ষ ধনী ব্যক্তিও তিনি। এছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও তিনি তুমুল জনপ্রিয় একজন ব্যক্তি, বিশেষ করে টুইটারে। ইলন মাস্ক এর টুইটারে ৮ কোটি ৪২ লাখের বেশি অনুসারী তাঁর। তবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তাঁর কোনো অ্যাকাউন্ট নেই। ফেসবুকের বিরুদ্ধে তিনি রীতিমতো নাখোশ।

বিশেষ করে ব্যক্তিগত গোপনীয়তার বিষয় গুলো নিয়ে তিনি কাজ করতে চান। এছাড়া ব্যক্তিগত গোপনীয়তার বিষয় গুলো শক্তিশালী করা, টুইটারকে আরও বেশি সহজ, উন্মুক্ত ও টেকনিক্যালি আরও স্বচ্ছ করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে টুইটারকে কিনে নিলেন ইলন মাস্ক।

প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ইলন মাস্ক বরাবরই ঠোঁট- কাটা বা স্পষ্টভাষী হিসেবে পরিচিত। সময় পেলে ফেসবুকের বিরুদ্ধে দু- একটি কথা শোনাতে ভোলেন না তিনি। বর্তমান প্রযুক্তি বিশ্বে দীর্ঘ দিন ধরেই গুঞ্জন ছিল, ফেসবুককে টক্কর দিতে ইলন মাস্ক হয়তো নতুন কোনো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম আনবেন পৃথিবী বাসীর জন্য। তবে টুইটারে তাঁর পোস্ট থেকে অনেকেই আবার ভিন্ন ধারণাও পোষণ করতে থাকেন। ইলন বরাবরই নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ নিতে আগ্রহী, গতকাল সোমবার সেই টুইটারে লাভ চিহ্ন দিয়ে “ইয়েস” কথাটি লিখলেন, তখন আর কারও বুঝতে বাকি নেই, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টুইটারের মালিক এখন কে।

এক সংবাদের বিবিসি জানিয়েছে, ৪ হাজার ৪০০ কোটি মার্কিন ডলারে মার্কিন ধনকুবের ইলন মাস্কের কাছে টুইটার বিক্রি করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এর পরিচালনা পরিষদ। তবে বেশ কিছুদিন কথা চালা-চালির পর গতকাল সোমবার এক বৈঠক থেকে সর্বশেষ এ সিদ্ধান্ত এসেছে।


সাধারন মানুষ এখন প্রশ্ন করছে, ইলন মাস্ক কোন উদ্দেশ্যে টুইটার কিনলেন, আর টুইটার নিয়ে তিনি কোন পথে হাঁটবেন? এ-ব্যাপারে অবশ্য তিনি আগে ভাগেই সব পরিষ্কার করে বলে দিয়েছেন।

ইলন মাস্ক আগেই বলেছিলেন, তিনি একেবারে রাজনীতির বাইরে থাকতে চান। তবে ইতিমধ্যে বেশ কয়েক বার মার্কিন সরকারের সমালোচনা করেছেন তিনি। এদিকে দ্বিতীয় শীর্ষ ধনী ও প্রযুক্তি উদ্যোক্তা জেফ বেজোস তাঁকে খোঁচা দিয়ে রেখেছেন। তিনি বলেছেন, চীন সরকার কি এবার টুইটার থেকে বাড়তি সুবিধা পাবে?তবে মাস্ক অবশ্য এর কোনো জবাব দেননি এখনো।

বিবিসির খবরে আরও জানানো হয়েছে, কিছুদিন আগে টুইটারের ৯.২ শতাংশ শেয়ার কিনেছেন বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ ধনী ইলন মাস্ক। সেই তখন থেকেই গুঞ্জন উঠেছিল ছিল, তিনি পুরো টুইটার কিনে নেবেন। এবার তাহলে সেই গুঞ্জন সত্যি হলো।এখন মাস্ক টুইটারের পূর্ণাঙ্গ মালিকানা কিনে নিতে ৪ হাজার ৩০০ কোটি ডলারের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। এই নিয়ে টুইটারের পরিচালনা পর্ষদের সঙ্গে মাস্কের বৈঠক হয়। তবে টুইটারের পর্ষদ এর আগে মাস্কের প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছিল।

ইলন মাস্ক কিছুদিন আগে বলেছেন, তিনি বিশ্বাস করেন, টুইটারের আরও উন্মুক্ত ও টেকনিক্যালি স্বচ্ছ হওয়া উচিত। এটি বাক স্বাধীনতার অন্তর্ভুক্তি মূলক পরিবেশ হওয়া উচিত। তিনি নিজের সাড়ে ৮ কোটি অনুসারীর উদ্দেশে প্রশ্ন রাখেন, টুইটারে এডিট বাটন বা সম্পাদনার সুযোগ রাখা উচিত কি না। উত্তরে ৭৪ শতাংশ মানুষ বলেন, ‘হ্যাঁ, রাখা উচিত।”

এখন ইলন মাস্কের প্রস্তাব বাস্তবায়িত হলে কে টুইটার পরিচালনা করবেন, তা পরিষ্কার নয়। কোম্পানির অফিসিয়াল ওয়েবসাইট অনুসারে তিনি টেসলার প্রধান নির্বাহীর পাশাপাশি ‘টেকনোকিংশিয়াছাড়া একধারে তিনি প্রধান নির্বাহী, প্রধান প্রযুক্তি কর্মকর্তা এবং রকেট ও মহাকাশযান সংস্থা স্পেসএক্সের চেয়ারম্যান। ইলন মাস্ক আরও বেশ কয়েকটি ব্যবসা ও স্টার্টআপের সঙ্গে জড়িত। টুইটারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন ভারতীয় প্রযুক্তিবিদ পরাগ আগরওয়াল। এছাড়া টুইটারের সহপ্রতিষ্ঠাতা জ্যাক ডরসির সমর্থনে গত নভেম্বরে তিনি দায়িত্ব পেয়েছিলেন। ওই সময় ডরসি বলেছিলেন, “টুইটারের প্রধান নির্বাহী হিসেবে পরাগের ওপর আমার আস্থা আরও গভীর। আমি মাস্ক এর দক্ষতা, সহৃদয়তা ও আত্মার প্রতি গভীর ভাবে কৃতজ্ঞ। এখন তাঁর নেতৃত্ব দেওয়ার সময় এসেছে।”

ইলন মাস্ক ইতিমধ্যে টুইটারের ব্যবস্থাপনা নিয়ে সমালোচনা করেছেন। প্রস্তাব-পত্রে তিনি টুইটারের চেয়ারম্যান ব্রেট টেলরকে বলেছেন, “ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষে আমার আস্থা নেই।”

তবে টুইটার ব্যবহারকারীরা আশা করতে পারেন, ইলন মাস্কের অধীন এটি আরও উদার হবে। তাঁর প্রতি শ্রুতি যদি অটল থাকে, তবে টুইটারকে আরও উন্মুক্ত দেখা যাবে এটা সত্যি।

বিবিসি, ইনডিপেনডেন্ট, নিউইয়র্কার, ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল থেকে মো. মিন্টু হোসেন