যে সকল মায়েরা প্রথম বার মা হতে যাচ্ছেন তাদের মধ্যে গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ সমূহ নিয়ে বেশি চিন্তিত থাকেন। সাধারণ ভাবে গর্ভবতী হওয়ার ০১ থেকে ০২ সপ্তাহের মধ্যে কিছু লক্ষণ দেখা দিতে পাড়ে কোন-কোন সময় একটু দেরিও হতে পাড়ে।
গর্ভাবস্থায় যেসব লক্ষণ দেখা দিতে পারেঃ
জরায়ুতে ডিম্বানু নিষিক্ত হওয়ার জন্য প্রায় ০৬ দিন পর্যন্ত সময় লাগতে পারে, গর্ভ ধারণের ষষ্ঠ সপ্তাহ থেকে অষ্টম সপ্তাহ পযন্ত সময় লাগে গর্ভ ধারণের লক্ষণ গুলো প্রকাশ পেতে। শতকরা ৬০ ভাগ মহিলাদের ষষ্ঠ সপ্তাহেই লক্ষণ সমূহ প্রকাশ পেয়ে থাকে এবং ৮ম সপ্তাহে শতকরা ৯০ ভাগ মহিলাদের লক্ষণ বা উপসর্গ প্রকাশ পায়। তবে যে সব মেয়েদের নিয়মিত মাসিক না হয় কিংবা আপনি মাসিকের সময় খেয়াল না রাখতে পারেন তাহলে কিছু উপসর্গ বা লক্ষণ আপনার মাঝে প্রাকাশ পেলে বুঝতে পারেন আপনি গর্ভবতী।
০১. পিরিয়ড বা ঋতুস্রাব বন্ধ হওয়াঃ
সাধারণত প্রতি মাসে ২৮ দিন পর পর মেয়েদের মাসিক বা ঋতুস্রাব হয়ে থাকে। তবে নিদিষ্ট সময় পর ঋতুস্রাব বা পিরিয়ড না হয় তাহলে সাধারণ ভাবে বুঝে নিবেন আপনি গর্ভবতী। আবার, অনেক সময় পিরিয়ড বন্ধ হলেই যে আপনি গর্ভবতী এমন টা কিন্তু নয়। অধিক বিষণ্ণতা, সঠিক সময় খাবার না খাওয়া, ঠিক মত না ঘুমানো, শরীর দুর্বল থাকলে, ইত্যাদি অনেক কারণে মাসিক অনিয়মিত হতে পারে। তবে আপনি, পিরিয়ড বা ঋতুস্রাব বন্ধ হলে প্রেগনেন্সি কিট দিয়ে পরিক্ষা করে নেয়া উচিত। তাতে করে করে আপনি সঠিক ভাবে জানতে পারবেন আপনি আসলেই গর্ভবতী হয়েছেন কিনা।
০২. মাথা ঘোরা, বমি বমি ভাবঃ
সাধারণত গর্ভ ধারণের প্রাথমিক পর্যায়ে ঘন ঘন মাথা ঘোরা, বমি হওয়ার সমস্যা হতে পারে। তবে এই সময় এটা খুবই স্বাভাবিক ব্যপার। ঘন-ঘন বমি, মাথা ঘোরা হলে অনেকেই ধরে নেন গর্ভ ধারণে কনফার্ম হয়েছে। তবে অনেক সময় শরীর দুর্বল ও অন্যান্য সমস্যার কারণেও মাথা ঘুরতে পারে বা বমি হতে পারে।
০৩. খাবারে অনিহা বা অরুচিঃ
মায়েদের গর্ভ ধারণের পর খাবারে অরুচি বা অনিহা থাকতেই পারে, এটা খুবই স্বাভাবিক একটা ব্যাপার। গর্ভাবস্থায় আপনি কিছু কিছু খাবারের গন্ধ আপনার কাছে অসয্যনীয় হতে পারে। এ রকম গন্ধ প্রবন হওয়ার জন্য নিশ্চিত ভাবে কিছু বলা যায় না। তবে শরীরে এস্ট্রোজেন হরমোন বৃদ্ধির কারণে এমন হয়ে থাকে বলে ধারণা করা হয়।
০৪. ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়াঃ
গর্ভাবস্থায় হরমোনের কারণে দেহে রক্ত প্রবাহ বৃদ্ধি ঘটে। এই সময় হরমোনের পরিবর্তনের কারণে আপনার দেহের স্বাভাবিক কার্যক্রম গুলো দ্রুত হয়, যার কারণে আপনার দেহে রক্ত প্রবাহ বৃদ্ধি ঘটে। এসব কারণেই আপনার মূত্র থলি দ্রুত পূর্ণ হয়ে যায় এবং ঘনন-ঘন প্রস্রাব হওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয়। এরকম অবস্থায় আপনি প্রস্রাব আটকে রাখতে পারবেন না, এমনটা কখনো করা ও উচিত নয়। এতে করে ভূণের বৃদ্ধির সাথে সাথে জরায়ুর আকার বেড়ে যায়। গর্ভ ধারণের পর যত সময় যাবে তত ঘন ঘন প্রস্রাব পাওয়ার প্রবণতা বাড়তেই থাকবে।
০৫. শরীর দুর্বল বা ক্লান্ত লাগাঃ
মায়েদের গর্ভ ধারণের ১ম অবস্থা থেকেই শরীর দুর্বল বা ক্লান্ত লাগতে পারে। এই সময় শরীরে হরমোনের পরিবর্তন এর কারণেই শরীর দুর্বল বা ক্লান্ত লাগে এবং রাতে ঘন-ঘন প্রস্রাব করার কারণে ঘুম থেকে বার বার উঠতে হয়। রাতে ঠিক মত ঘুম না হওয়ার কারণে দিনে শরীর দুর্বল বা ক্লান্ত লাগে।
০৬. শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধিঃ
গর্ভাবস্থায় মায়েদের শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক এর চেয়ে একটু বেশি থাকে। তবে আপনি যদি আপনার শীরের তাপমাত্রা পর্যবেক্ষণ করেন এবং দেখেন টানা ১৮ দিন শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক এর চেয়ে বেশি থাকে তাহলে বুঝবেন আপনার প্রেগনেন্সি পজেটিভ।
গর্ভধারণ অবস্থায় সাধারণ প্রশ্নঃ
০১. গর্ভধারণ অবস্থায় কি পিরিয়ড বা ঋতুস্রাব বন্ধ হয়?
উত্তরঃ গর্ভ ধারণ অবস্থায় পিরিয়ড বা ঋতুস্রাব বন্ধ হয়। এটা ঠিক সন্তান জন্ম নেবার পর পর্যন্ত হয়ে থাকে। তার পর টানা ০১ মাস পর্যন্ত পিরিয়ড বা ঋতুস্রাব হয়। কোন-কোন ক্ষেত্রে ৪০ দিন বা তার ও বেশি হয়ে থাকে।
০২. গর্ভধারণ এর কত দিন পর পজিটিভ বোঝা যায়?
উত্তরঃ পিরিয়ড বা ঋতুস্রাব বন্ধ হবার ২ সপ্তাহ পর গর্ভধারণ হয়েছে কিনা তা প্রেগনেন্সি কিট এর মাধ্যমে বোঝা যায়। আর যদি পজিটিভ আসে তাহলে বুঝতে হবে আপনি ০২ সপ্তাহের প্রেগন্যান্ট। প্রেগন্যান্ট হওয়ার ০২ সপ্তাহ পর সঠিক ভাবে বোঝা যায় আপনি আসলে প্রেগন্যান্ট।